♦♦ থাইরয়েড♦♦
>>>আজ আপনাদের সামনে নিরবঘাতক (Silent killer) থাইরয়েড সম্পর্কে কিছু কথা বলব।
>প্রথমে আসি থাইরয়েড কি? এবং এর কারনঃ
থাইরয়েড একটি বৃহৎ গ্ল্যান্ড যা আমাদের গলার মাঝামাঝি ও নিচের অংশে থাকে। এই অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন নামের হরমোন নিঃসৃত হয়।থাইরয়েড হরমোন তৈরীর জন্য আয়োডিন লাগে, এবং সারা দুনিয়ার পরিসংখ্যানে আয়োডিনের অভাবই হাইপোথাইরয়েডিজমের সর্বপ্রধান কারণ। এমন একটি কারণ যা দূর করা কঠিন নয়। অথচ এখনো এই দূরণীয় কারণের প্রকোপ পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ শিশুর মানসিক জড়তা ঘটিয়ে চলেছে। আয়োডিনের অভাবই প্রধান কারণ হলেও হাইপোথাইরয়েডিজমের একমাত্র কারণ নয়। নানান কারণে থাইরয়েড গ্রন্থিতে হর্মোন উৎপাদনের অভাব হতে পারে, যার পরিণাম সাময়িক অথবা স্থায়ী হতে পারে। যেমন হাইপারথাইরয়েডিজমের ট্রিটমেন্ট করবার সময় তেজস্ক্রীয় আয়োডিন-১৩১ প্রয়োগ করা হয় যা থাইরয়েড গ্রন্থিতে জমা হয় ও থাইরয়েড গ্রন্থির তীব্র ক্ষতি করে যার স্থায়ী ফল হিসাবে আয়াট্রোজেনিক (অর্থাৎ ঔষধজনিত বা চিকিৎসাঘটিত) হাইপোথাইরয়েডিজম ঘটে এবং তখন বাকী সারা জীবন এই রোগীদের থাইরয়েড হর্মোন ওষুধ হিসাবে খেতে হয়।
থাইরয়েড গন্থি থেকে ২ ধরনের হরমোন বের হয়।
T3, T4,
থাইরয়েড আমাদের গলায় অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রন্থি যা আমাদের দেহে থাইরয়েড হরমোন তৈরি করে। থাইরয়েড হরমোন দুই ধরণের হয়ে থাকে। একটি হলো T3(০.১%) এবং অপরটি T4(৯৯.৯%)। এই হরমোন দুটি আমাদের শরীরের অনেক গুরত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে।
হাইপোথালামাস, পিটুইটারি এই ২ টির যে কোন একটিতে সমস্যা থাকলে, শরীরে থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণের তারতম্য ঘটে। এছাড়া আয়োডিন এর অভাব হলেও থাইরয়েড হরমোনের পরিমান কমে যায়। যদি শরীরে থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ কমে যায় তবে তাকে বলে হাইপোথাইরয়েডিসম আর যদি বেড়ে যায়, তাকে বলে হাইপারথাইরয়েডিসম। এই দুটোই শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে থাইরয়েডের সমস্যায় মৃত্যু পর্যন্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে দেখে নেয়া যাক থাইরয়েড সমস্যা প্রকাশ করে যে লক্ষণগুলো।
♦থাইরয়েডের লক্ষন সমূহঃ
মেজাজ খিটমিটে থাকা, খুব সহজে রাগান্বিত হওয়া, মাথা হালকা বোধ হওয়া, মাথা ঘোরানো বা মাথাব্যথা, সব কিছুকে স্নায়ু রোগের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শারীরিক দুর্বলতা, শারীরিক অক্ষমতা, শক্তি প্রয়োগের কাজ করতে অপারগতা ইত্যাদি হলো শারীরিক কাঠামোগত অসুস্থতার লক্ষণ। বারবার প্রস্রাবের বেগ হওয়া, প্রস্রাব করার পরও পেটে প্রস্রাব জমা থাকার মতো ভাব হওয়া ইত্যাদি মূত্ররোগের লক্ষণ। চর্ম রোগের লক্ষণ হিসেবে চামড়া পাতলা হয়ে যাওয়া, খসখসে হয়ে যাওয়া, পশম ঝরে পড়া, চামড়ায় দাগ পড়া, চুলকানি হওয়া লক্ষ করা যায়। স্ত্রীরোগের লক্ষণ যেমন, ঋতুস্রাবের সমস্যা, পিরিয়ডের সময় অত্যধিক ব্যথা অনুভূত হওয়া, অত্যধিক পরিমাণে রক্তস্রাব হওয়া, বন্ধ্যত্ব দেখা দেওয়া। উল্লেখিত লক্ষণসমূহ যদিও বিভিন্ন শারীরিক সিস্টেমের (তন্ত্রের) সমস্যা কিন্তু একটি মাত্র কারণে কোনো ব্যক্তির শরীরে এগুলো পর্যায়ক্রমে বা এলোমেলোভাবে পরিলক্ষিত হতে পারে এবং তা হলো থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যা। থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যায় আরও অনেক উপসর্গ দেখা দিতে পারে যেমন- অত্যধিক গরম বা অত্যধিক ঠাণ্ডা অনুভূত হওয়া, শারীরিক ওজন কমে যাওয়া বা শারীরিক ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকা।
♦ এবার মুলত ২ প্রকার থাইরয়েড সম্পর্কে বলবঃ
#হাইপারথাইরয়েডসিম অর্থাৎ থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ বেশি হলে এর লক্ষন সমূহ:
* অতিরিক্ত ঘাম হওয়া শুরু হয়।
* রোগী একেবারেই গরম সহ্য করতে পারেন না।
* হাত ও পায়ে হালকা কাঁপুনি অনুভব করা। অর্থাৎ কোনো কিছু করতে গেলে বা ধরতে গেলে হাত কাঁপা।
* কোনো কাজ বা সিদ্ধান্ত নিতে গেলে অতিরিক্ত নার্ভাস বোধ করা।
* সব সময় মেজাজ প্রচণ্ড খারাপ থাকা এবং খিটখিটে হয়ে যাওয়া।
* সাধারণের তুলনায় হার্টবিট বেশি মাত্রায় বেড়ে যাওয়া।
* হঠাৎ করে কোন কারন ছাড়াই ওজন কমতে শুরু করা।
* অল্প পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া ও দুর্বলতা অনুভব করা।
* কাজেকর্মে মনোযোগী হতে না পারা বা একদিকে মনোনিবেশ করতে না পারা।
* চোখ বড় বড় হয়ে যাওয়া।
* ঘুম অনেক কম হওয়া ও অনিদ্রার সমসায় ভোগা।
#হাইপোথাইরয়েডিসম অর্থাৎ থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ কম হলে এর লক্ষন সমূহ:
* অল্প পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া ও সব সময় দুর্বলতা অনুভব করা।
* স্মৃতিশক্তি অনেক কমে যাওয়া এবং কোনো কিছু মনে করতে না পারা।
* একেবারেই ঠান্ডা সহ্য করতে না পারা।
* ত্বক একেবারে বিবর্ন ও শুস্ক রুক্ষ হয়ে যাওয়া।
* মাংসপেশি এবং জয়েন্ট গুলোতে জড়তা বা ব্যাথা অনুভব করা।
* বিষণ্ণতায় ভোগা।
* চুল পাতলা হয়ে যাওয়া এবং মাত্রাতিরিক্ত আগা ফাটা ও চুল পরে যাওয়া অথবা নখে ফাটা দাগ পরা।
* সাধারণ হাঁটাচলায় কষ্ট হওয়া।
* হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই ওজন বেড়ে যাওয়া।
♦ হাইপারথাইরয়েডিসম এ রোগীর লক্ষণ গুলো হলোঃ
১.বুদ্ধি কম
২.হজমে সমস্যা, যেহেতু মেটাবলিজম কম হয় তাই কোষ্ঠকাঠিন্য
৩.অরুচি
৪. মানসিক বিকৃতি
৫. শরীর শুকিয়ে যাওয়া
৬ লোম না উঠা
৭.ত্বক খসখসে
৮. শীর্নতা
♦হোমিও মেডিসিন : হোমিওপ্যাথিতে থাইরয়েডের চিকিৎসায় থাইরয়েডিনাম ছাড়াও আয়োডিন, নেট্রাম মিউর, লাইকোপিডিয়াম, সাইলেসিয়া, থুজা, মেডোরিনাম, স্পজ্ঞিয়া, লেপিস এলবা,ক্যাল ফ্লোর সহ আরো অনেক মেডিসিন লক্ষণের ওপর আসতে পারে তবে কথা হল” Treat the patient not the disease ”
বাকি টুকু একজন চিকিৎসকের নিজিস্ব চিন্তা ধারার উপর নির্ভর করবে। তবে কথা হল ধাতুগত ট্রিটমেন্ট অতি জরুরী একে নিয়ন্ত্রন করার জন্য।
আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে তাকে রিকুয়েষ্ট দিয়ে এ্যাড হোন।
Youtube.amarhomoeo
Dr adnan sami homoeo pathy consaltant 01721418696