🌬️➡️সোরিয়াসিস রোগের
হোমিওপ্যাথিক ।01721418696
https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-6809218925405223
(Homeopathic remedies for Psoriasis)
সোরায়সিস (Psoriasis) বা সোরিয়াসিস রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি সফলভাবে অনেক দূরারোগ্য শারীরিক ও মানুসিক রোগ, চিকিৎসা করতে সক্ষম।
সোরিয়াসিস (Psoriasis – একটি জটিল চর্মরোগ। কয়েকটি হোমিওপ্যাথিক ওষুধ আছে যা দিয়ে সোরিয়াসিস (Homeopathic remedies for Psoriasis) রোগীদের সফলতার সাথে চিকিৎসা করে স্থায়ীভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ করা যায়।
নিয়মিত এই ঔষধগুলো লক্ষণানুযায়ী নির্দিষ্ট নিয়মে গ্রহণ করার মাধ্যমে, সোরায়সিসের বিস্তার ও তীব্রতা হ্রাস পাবে, আক্রান্ত ব্যাক্তির ত্বক পরিষ্কার হবে এবং ক্ষত বা ক্ষতিকারক চিহ্ন মুছে যাবে।
সোরিয়াসিস বা Psoriasis রোগ কেন হয়?
সোরিয়াসিস বা সোরাইসিস চিকিৎসায় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ওষুধসমূহ নিয়ে আলোচনা করার আগে একটি বিষয়ে পাঠকদের জানাতে চাই।
বিষয়টি হচ্ছে- হোমিওপ্যাথি মতে যেকোন চর্মরোগ হবার মূল কারণ হচ্ছে রোগীর মধ্যে কার্যকর সোরা মায়াজম। মায়াজম ব্যাপারটি একটু জটিলতা পূর্ণ বিষয়। তাই এই সম্পর্কে আলোচনা দীর্ঘায়িত না করে এ তথ্যটি উল্লেখ করার কারণটি বলছি।
অনেক সময় দেখা যায়, লক্ষণ অনুযায়ী সঠিক ওষুধটি প্রয়োগ করার পরও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, রোগীর শরীরস্থ সোরা মায়াজম ওষুধের ক্রিয়ায় বাঁধা প্রদান করে। ফলশ্রুতিতে রোগী সঠিক ওষুধ খাওয়ার পরও আশানুরূপ রোগ লক্ষণের উপশম দেখতে পায়না। ফলে অনেক সময় ভুল বুঝে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে ও চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়।
সোরাইসিস রোগ প্রতিকারে করণীয় কি?
সালফার নামীয় হোমিওপ্যাথিক ঔষধটি হচ্ছে একটি প্রথম সারির, অনেকের মতে প্রধান এন্টিসোরিক ঔষধ। এই ওষুধটি উপযুক্ত শক্তিতে সোরিয়াসিস চিকিৎসার শুরুতে রোগীকে সেবন করতে দিলে রোগীর শরীরস্থ সোরা দোষের যেমন প্রতিকার হয় ঠিক তেমনি লক্ষণ অনুযায়ী অন্য ওষুধ প্রয়োগ করলে সেই ওষুধকেও সাহায্য করে থাকে।
এমনকি রোগীর রোগ লক্ষণ যদি সালফার এর সমলক্ষণ যুক্ত হয় তবে অনেক ক্ষেত্রে একমাত্র সালফার ওষুধটি রোগী দেহের সোরিয়াসিস বা সোরায়সিস এর লক্ষণ সমূহের সার্থকভাবে চিকিৎসা সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়।
সোরিয়াসিস বা সোরাইসিস -এ সচরাচর ব্যবহৃত ঔষধসমূহ (Common Homeopathic remedies for Psoriasis)
১. কার্সিনোসিন
এই হোমিওপ্যাথিক ঔষধটি বংশগত কারণে আক্রান্ত রোগীদের জন্য। এটা ক্যান্সারযুক্ত টিস্যু থেকে তৈরি করা একটি কার্যকর হোমিওপ্যাথিক ঔষধ। কোন ব্যাক্তির বাবা-মা, দাদা-দাদী, নানা-নানী বা তাদের রক্ত সম্পর্কীয় কেউ যদি সোরায়সিস বা ক্যান্সার জাতীয় কোন অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে উক্ত ব্যাক্তি ক্যান্সার মায়াজমের বাহক হবেন।
এক্ষেত্রে বংশগত বাহক হিসেবে সেই একই রোগবীজ পরবর্তী প্রজন্মের বংশধারার ব্যক্তিদের শরীরে দেখা দিতে পারে। এইরুপ বংশগত বাহকদের সোরায়সিস চিকিৎসায় কার্সিনোসিন সুন্দর ফলাফল প্রকাশ করে থাকে। এটি মানসিকভাবে ভঙ্গুর রোগীদের জন্য নির্ধারিত হয়।
২. ক্যালি আর্স
এই সোরিয়াসিস রোগীদের গুরুতর অবস্থায় যারা প্রায়ই খিঁচুনি জাতীয় সমস্যা ভোগ করে তাদের জন্য নির্ধারিত হয়। এটি কনুইয়ের ভিতরের দিকের পাশে এবং হাঁটুর পেছনে ক্ষতগুলি ছিঁড়ে ফেলে এবং ওজন কমানোর জন্য নির্ধারিত হয়। কালি আর্স সোরিয়াটিক আর্থায়টিস রোগীদের জন্য সর্বাধিক কার্যকর হোমিওপ্যাথিক ঔষধ (best homeopathic medicine for Psoriatic Arthritis)।
৩. ক্যালি সালফ
সোরিয়াসিস চিকিৎসার জন্য পটাসিয়াম সালফেট হতে একে তৈরী করা হয়। ক্যালি সালফ এর রোগীর চর্ম প্রায়ই শুষ্ক থাকে। এরা গরম আবহাওয়ায় খুব কষ্ট পায় ও মেজাজ খিটখিটেপনার পরিচয় দেয়। ক্যালি সালফ এর রোগীদের উদ্ভেদ থেকে পাতলা হলদেটে রস নিঃসরণ হয় ও তাদের জিহ্বার গোড়ায় দিকটায় হলদেটে ক্লেদযুক্ত আবরণ থাকে।
৪. অ্যাপিস মেলিফিকা
এই ওষুধটি আবহাওয়া, তাপমাত্রা, পরিবেশ, খাদ্য, পানীয় প্রভৃতি গরম, উত্তপ্ত হলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শরীরে প্রায় শোথ দেখা দেয়। চর্ম দেখতে শুষ্ক মনে হয় এবং স্পর্শ সংবেদনশীল হয়।
এদের শরীরে এবং উদ্ভেদে লালচে বা গোলাপী আভা বা ঔজ্জ্বল্য দেখা যায়। এদের প্রায়ই মূত্র সংশ্লিষ্ট যন্ত্রণায় যথা মূত্রবদ্ধতা, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, প্রস্রাবের সাথে রক্ত আসা প্রভৃতি সমস্যায় আক্রান্ত হতে দেখা যায়।
সোরিয়াসিস (Psoriasis) চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত ঔষধসমূহ
৫. গ্রাফাইটিস
গ্রাফাইটিস রোগী সাধারণত মোটা, মেদবহুল ও ফর্সা চেহারার অধিকারী হয়ে থাকে। এটি ত্বকের ক্রমাগত শুষ্কতা, সেইসাথে শক্ত, পুরু এবং রুক্ষ ত্বকের চিকিৎসায় সহায়তা করে। আক্রান্ত ব্যক্তির উদ্ভেদ থেকে মধুর মত গাঢ় রস বের হয়।
নখের উপর, কানের পিছনে এবং কুঁচকি অঞ্চলে, ঘাড়, কাঁধ এবং হাঁটু এর বাঁক এর উপর প্রভাব বিস্তারকারী সোরায়সিস এর লক্ষণযুক্ত চর্মরোগ চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
গ্রাফাইটিস এর রোগীরা প্রায়ই কোষ্ঠবদ্ধতায় কষ্ট পায় এবং ঠান্ডা তাপমাত্রায় অতি সংবেদনশীল হয়।
৬. মেজরিয়াম
এটি বেশ কার্যকরভাবে ত্বক এবং মাথার খুলিতে আক্রান্ত সেরিয়াসিস চিকিৎসা (homeopathic treatment for psoriasis on the scalp) করার প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে। মেজরিয়ামের রোগীর উদ্ভেদে গাঢ় অর্থাৎ ঘন পুঁজ জমে। এমনকি উক্ত পুঁজে পোঁকা হতেও দেখা যায়। এ সমস্ত রোগীরা উদ্ভেদে চুলকানির জন্য প্রচুর কষ্ট পায়।
সোরায়সিস এর সর্বাধিক কার্যকর হোমিওপ্যাথি ঔষধ (Best effective homeopathic remedies for Psoriasis)
৭. আর্সেনিক অ্যালবাম
এই ঔষধটি সেই সমস্ত সোরিয়্যাটিক রোগীদের জন্য যারা ঠান্ডা আবহাওয়া ও ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে কষ্ট পায় ও সর্ববিধ গরম আবহাওয়া বা অবস্থার অধীনে তুলনামূলকভাবে ভাল বোধ করে।
আর্সেনিক অ্যালবাম ও আর্সেনিক আইয়ড সোরায়াসিস চিকিৎসায় সর্বাধিক কার্যকরী ও ব্যাপকভাবে ব্যবহারকৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ। উভয় ঔষধের রোগীদের চর্ম থেকে প্রায় মাছের আইসের মত ছাল উঠে ও অধিকাংশ ক্ষেত্রে শরীরের নিম্নাংশ আক্রান্ত হয়।
৮. আর্সেনিক আইয়ড
এই ঔষধটির লক্ষণও আর্সেনিক অ্যালবামের মতই। তবে এর রোগীরা গরম আবহাওয়া, পানি ও বায়ুর সংস্পর্শে কষ্ট পায় ও তাদের রোগ লক্ষণসমূহ বৃদ্ধি পায়। আক্রান্ত অংশ বিভিন্ন রং এর উদ্ভেদ বা আঁশ জাতীয় পদার্থে পরিপূর্ণ থাকে। রোগী সাধারণত হালকা পাতলা গরণের ও দুর্বল, জরাজীর্ণ শরীরের অধিকারী হয়।
৯. সিপিয়া
আক্রান্ত অংশে খুব দুর্গন্ধ থাকলে, সিপিয়া সোরিয়াসিসের জন্য সেরা হোমিওপ্যাথিক ওষুধের একটি। এটি একটি গভীরভাবে কার্যকরি ঔষধ এবং প্রায়ই পুনরাবৃত্তি করা উচিত নয়।
মহিলাদের মধ্যে সিপিয়ার লক্ষণযুক্ত রোগী বেশি দেখা যায় এবং মেনোপজের পর আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে । সোরিয়াসিস আক্রান্ত অংশ হলুদ বর্ণের হয়। দুর্বলতা, বিরক্তিকর আচরণ এবং উদাসীনতা সোরিয়াসিসের স্বাভাবিক উপসর্গগুলি সহ উপস্থিত থাকে।
সোরিয়াসিসে আমাদের দেশজ হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ব্যবহার
১০. হাইড্রোকোটাইল এশিয়াটিকা
এছাড়া হোমিওপ্যাথি মতে সোরায়সিস চিকিৎসায় আমাদের দেশজ ঔষধ থানকুনি বা হাইড্রোকোটাইল এশিয়াটিকাও সাফল্যের সাথে ব্যবহৃত হয়। বিস্তারিত জানতে থানকুনির কার্যকারিতা রচনাটি পড়ে দেখতে পারেন।
সোরিয়াসিস চিকিৎসার সময়ে অবশ্য পালনীয় নিয়মাবলীঃ
সবধরণের অ্যালার্জি যুক্ত বা চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। সম্ভব হলে সম্পূর্ণ বর্জন করতে হবে।
প্রয়োজনে দীর্ঘদিন ধৈর্য ধরে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। কারণ সোরায়াসিস যেমন কঠিন ও জটিল রোগ তেমনি এর চিকিৎসাও জটিল ও সময়সাপেক্ষ্য। এক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করে কোন ফল পাওয়ার আশা করা ঠিক হবে না।
ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে সদা সচেতন থাকতে হবে।
বাহ্য ব্যবহারের জন্য সব ধরণের হারবাল বা কসমেটিক্স জাতীয় মলম, ক্রীম ব্যবহার করা যাবে না। ফলতঃ এতে কাজও হবে না।
সোরিয়াসিস মানুষের ধাতুগত বা মজ্জাগত অনেক গভীরে প্রভাব বিস্তারকারী একটি রোগ যা কিনা শুধুমাত্র চর্মে ব্যবহারযোগ্য মলম বা ক্রীমের মাধ্যমে চিকিৎসা করা অসম্ভব।
বিঃদ্রঃ রেজিষ্ট্রার্ড হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে।
01721418696