মানবদেহের হরমোনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে করণীয়*
**********************************************
*ইস্ট্রোজেন হরমোন*
পুরুষের তুলনায় মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ বেশি থাকে। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত ভাবে এই হরমোনের পরিমাণ বাড়তে থাকলে শরীরে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরীক্ষা বলছে, নিরামিষাশীদের তুলনায় আমিষাশীদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ অনেক বেশি। মাংসের কারণে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ বাড়ে। যদি এই হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে চান, তাহলে ২১ দিন আমিষ বন্ধ রাখুন, পারলে তার সঙ্গে মদ্যপান থেকেও দূরে থাকুন।
*ইনসুলিন হরমোন*
ইনসুলিন খাবার হজম করে তার থেকে শক্তি উৎপাদন করার জন্য এই হরমোনের প্রয়োজন। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি বা শর্করা জাতীয় খাবার শরীরে গেলে সারাক্ষণ ইনসুলিনের চাহিদা তৈরি হয় এবং শেষ পর্যন্ত শরীর ইসুলিন রেজিস্ট্যান্ট হয়ে পড়ে। তাতে রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়তে থাকে। ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। ২১ দিন চিনি বা শর্করা জাতীয় খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিলে এই হরমোনের ভারসাম্য ফিরতে পারে।
*লেপটিন*
লেপটিন ফলের মধ্যে থাকে ফ্রুকটোজ। সেই ফ্রুকটোজ হজম করার জন্য লেপটিন হরমোনের দরকার। লেপটিনের পরিমাণ বাড়লে ইনসুলিনের ক্ষেত্রে যা যা সমস্যা হয়, এখানেও তাই তাই-ই হয়। অনেকে বলেন আগে মানুষ অনেক বেশি পরিমাণে ফল খেয়েই থাকতেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে তো ডায়াবেটিস জাতীয় সমস্যা হত না। কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে আগে একটা আপেলে যে পরিমাণ ফ্রুকটোজ থাকত, এখনকার হাইব্রিডের আপেলে তার ১০ থেকে ১২ গুণ বেশি ফ্রুকটোজ থাকে। তাই ২১দিনের জন্য ফল খাওয়া বন্ধ রাখলে লেপটিনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা যায়।
*থাইরয়েড হরমোন*
থাইরয়েড হরমোন নিয়ে সমস্যাটা খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। আজকাল বহু মানুষই এই সমস্যায় আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এর পিছনে রয়েছে গ্রেনের ভূমিকা। হোয়াইট রাইস, পাস্তা, আলু- এগুলোর মধ্যে থাকা উপাদান থাইরয়েডের ভারসাম্যকে নষ্ট করে দেয়। সেই কারণে টানা ২১ দিন এই জাতীয় জিনিস আপনার খাদ্যতালিকায় না থাকলে, থাইরয়েডের ভারসাম্য ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
*করটিসল হরমোন*
করটিসল বা স্ট্রেস হরমোন মানসিক চাপের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হল কোরটিসোল হরমোনের উপস্থিতি। বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা বেশি পরিমাণে কফি পান করেন, তাদের শরীরে করটিসলের পরিমাণ বেশি থাকে। কারণ কফিতে থাকা ক্যাফিন করটিসলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তবে শুধুমাত্র কফির পরিমাণ কমিয়ে দিলেই এই হরমোনের ভারসাম্য ফিরে আসবে তেমন নয়। শরীরে লেড বা শিসার পরিমাণের ওপর এই হরমোনের বাড়া-কমা নির্ভর করে। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যারা লিপস্টিক ব্যবহার করেন, তাদের স্ট্রেস বেশি হতে পারে। কারণ লিপস্টিকের মধ্যে থাকে লেড বা শিসা। তাই লিপস্টিক কেনার সময় শিসা বিহীন কি না তা দেখে নেওয়া উচিত। এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন মানসিক চাপ বা স্ট্রেস বেড়ে গেলে খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে ফোন করুন। তাতে করটিসলের কারণে তৈরি হওয়া অ্যাড্রিনালিনের পরিমাণ কমে অক্সিটোসিনের পরিমাণ বাড়তে থাকবে। তাতেও এই হরমোনের ভারসাম্য আসবে শরীরে।
*টেসটোস্টেরন হরমোন*
পুরুষের প্রধান যৌন হরমোন হল টেসটোস্টেরন হরমোন।
শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বৃদ্ধিজনিত কারণে পুরুষের প্রধান যৌন হরমোন টেসটোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে।যে সব খাবারে বেশী পরিমাণ টক্সিন আছে।এই সব উপাদানসমূহের মধ্যে রয়েছে ধুমপানসহ সমস্ত প্রকার মাদক দ্রব্য। এই সব উপাদানসমূহ সরাসরি টেস্টোস্টেরন হরমোনের উপর বেশী প্রভাব বিস্তার করে।সুতরাং এই সব উপাদানসমূহ এড়িয়ে চললে টেসোস্টেরনের ভারসাম্য ফিরে আসবে।