নাসিকা থেকে উজ্জল রক্তস্রাব হলে এবং সেই সঙ্গে মাথাধরা ও মাথাব্যথা থাকলে এমিল – নাইট্রেট বিশেষ উপকারী ।
** এনাকার্ডিয়াম অজীর্ণ-রোগের একটি মহা-ঔষধ । অজীর্ণ রোগে নাক্স-ভমিকার অত্যন্ত অপব্যবহার হয় । এই দুইটি ঔষধই অজীর্ণ-রোগের অতি উত্তম ঔষধ । তবে প্রভেদ জ্ঞান থাকলে উহাদের ব্যবহারে আর কোন গোলযোগ হয় না । ( পেট বেদনা পেট খালি হলেই এই বেদনা আসে বা বৃদ্ধি পায়, কিন্তু আহার করলেই তার নিবৃত্তি হয় । নাক্স-ভমিকার পেটের বেদনা আহারের দুই বা তিন ঘণ্টা পরে বৃদ্ধি পায়, অর্থাৎ পরিপাকক্রিয়ার সময় বেদনার বৃদ্ধি এবং পরিপাক-ক্রিয়া শেষ হয়ে গেলে নিবৃত্তি হয় । * কিন্তু মনে রাখতে হবে এই সময় এনাকার্ডিয়ামের বেদনা বৃদ্ধি পায় ) । * এবিস-নায়েগ্রা আহারের পরক্ষণে পেটের বেদনার বৃদ্ধি > এনাকার্ডিয়ামে এই সময় নিবৃত্তি হয় ।
** অ্যান্টিম-ক্রুডও ব্রায়োনিয়ার জিভে সাদা প্রলেপ ও তার পার্থক্য > অ্যান্টিম-ক্রুডের সাদা প্রলেপ সমস্ত জিভে কিন্তু ব্রায়োনিয়ায় শুধু জিভের মধ্যাংশে ঐরকম প্রলেপ দেখা যায়, ধারগুলিতে সাদা প্রলেপ থাকে না । ব্রায়োনিয়ার কোষ্ঠবদ্ধ অ্যান্টিম-ক্রুডের কোষ্ঠবদ্ধের চেয়ে বেশী ; ব্রায়োনিয়ার মল ন্যাড় বড় বড় শুকনো – আর যদি তরল মল হয় তাহলে তা জলবৎ ও অত্যন্ত দুর্গন্ধময়, ঠিক পচা পনিরের গন্ধের মতো উহার গন্ধ । পালসেটিলার লক্ষণের সঙ্গে অ্যান্টিম-ক্রুডের লক্ষণের অনেক মিল আছে ।
** অ্যান্টিম–টার্টশ্বাস-যন্ত্রের পীড়ায় বিশেষভাবে কাজ করে । ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি-কাশি অথবা হুপিং-কাশি, যে কোন কাশিই হোক না কেন, যদি দেখা যায় যে, গলায় ও বুকে সর্দি জমে আছে ও সেজন্যে স্বর খুব মোটা অর্থাৎ ঘড়ঘড়ে এবং গলায় যেন সর্দির তাল খানিকটা আটকে আছে, অথচ রোগী তা তুলতে পারছে না, তা হলে সত্বর অ্যান্টিম–টার্টদিতে হবে । এই রোগে এই ঔষধের এই লক্ষণটি সকল ধাতুগ্রস্ত ও সকল বয়সের রোগীর চিকিৎসাকালে প্রথম ভাবতে হবে ।
** এলবুমেনুরিয়া রোগের অনেক লক্ষণ এপিসে আছে । তবে এলবুমেনুরিয়ায় এপিস ল্যাকেসিস ও আর্সেনিক, এই তিনটি ঔষধের লক্ষণ ও প্রভেদ বুঝে রাখলে কোন অবস্থায় এপিস উপযোগী তা বুঝতে পারা যাবে ।
** মেয়েদের রজঃস্তম্ভ রোগের জন্য যদি মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালিত হয় ও ইউটেরাইন প্রদেশে যদি প্রসব বেদনার মতো বেগ ও বেদনা হয় এবং তাতে যদি মাসিক না হয়, তাহলে এপিস উপযোগী ।
** বিবিধ চোখের অসুখে রাসটক্সের সঙ্গে এপিস-এর অনেক মিল দেখা যায় ।
এপিসে রোগী আলো সহ্য করতে পারে না, চোখের কনজাংটিভা এবং চোখ খুব লাল ও ফুলো ফুলো, চোখের পাতা ফোলা, চোখ দিয়ে প্রচুর পরিমাণে গরম জল বের হয় – এ সমস্ত লক্ষণগুলি রাস-টক্সে আছে, তবে চোখে পুঁজের মতো পিচুটি রাস-টক্সের বিশেষ লক্ষণ । কিন্তু এপিসে তা দেখা যায় না । এপিসে বেদনা ও হুল-ফোটানোর মতো যন্ত্রণার বৃদ্ধি সন্ধ্যাবেলায় হয়, আর ঠাণ্ডা জল চোখে দিলে রোগী আরাম বোধ করে, চোখ ফুলে থাকলে ভেতরটা এক্কেবারে নীলাভ-লাল বর্ণের হয় এবং চোখ জল-ভরা-ভরা ও অস্বচ্ছ দেখায় ; কিন্তু রাসটক্সে রাত্রেই বিশেষতঃ দুপুর রাতে বেদনা বেশী হয় । এপিসে চোখে ঠাণ্ডা জল দিলে রোগী আরাম বোধ করে । রাসটক্সের রোগী তার পরিবর্তে গরম জল প্রয়োগ করলে আরাম বোধ করে ।
** এপিস > পিপাসার অভাব ।
** এপোসাইনাম > ভয়ানক পিপাসা ।
** আর্সেনিক > পিপাসা, কিন্তু অল্প অল্প জল পান করা ।
** এসেটিক অ্যাসিড > ভয়ানক পিপাসা ।
** এপোসাইনাম – যেদিকে চেপে শুয়ে থাকা যায়, সেই দিক বেশী ফোলা ।
** এপিস – চোখ জননেন্দ্রিয় বেশী ফোলা ।
** আর্সেনিক – হাত ও পায়ে বেশী ফোলা ।
** এসেটিক অ্যাসিড- যেমন ভয়ানক পিপাসা, তেমনি অধিক পরিমাণে প্রস্রাব হয় ।
** উদরাময়ের কয়েকটি উপসর্গে আর্জেন্ট-মেট প্রয়োগ করলে উপকার পাওয়া যায় যেমন –
* শুষ্ক বালির মতো মলও নির্গত হতে পারে ।
* মলদ্বারের কাছে সব সময় বেগ হয় ।
* অল্প পরিমাণে তরল মল নির্গত হয় ।
** আর্জেন্ট – নাইট্রিকাম ছোট ছোট পাথরী নির্গমনের জন্যে কিডনিতে রক্ত সঞ্চিত হয়ে প্রস্রাবকালে ভয়ঙ্কর বেদনা ও যন্ত্রণা হলে ডাঃ প্রেসটন এই ঔষধ প্রয়োগে বিশেষ উপকারের কথা লিখেছেন । এই অসুখে যে সব লক্ষণে আমরা এই ঔষধ প্রয়োগ করে উপকার পেয়েছি তা হলো –
* মুখখানিতে যেন কেউ কালি ঢেলে দিয়েছে, মুখ যেন শুকিয়ে গেছে, মুখের এই শুষ্ক ভাব আর্জেন্ট – নাইট্রিকামের একটি বিশেষ লক্ষণ ।
* কোমরের এক দিক থেকে অন্যদিক পর্যন্ত ও মুত্রস্থলির উপর ঘুনঘুনে ব্যথা ।
* কেবল প্রস্রাবনির্গমন-এর সময় অত্যন্ত জ্বালা, মনে হয় যেন ইউরেথ্রা ফুলেছে । ( মনে রাখতে হবে যে, মার্ক-করে জ্বালা প্রস্রাবের অগ্রে, প্রস্রাবকালে ও প্রস্রাবের পরে হয়ে থাকে ) ।
* হঠাৎ প্রস্রাবের বেগ আসে ( পেট্রোসিলিনিয়ামদেখুন ) ।
* প্রস্রাব ঘন ঘন, রক্তমিশ্রিত অথবা ইউরিক এসিড ও রেনাল এপিথিলিয়াম মিশ্রিত । ( ক্যান্থারিসের সঙ্গে এই ঔষধের বিশেষ সাদৃশ্য দেখা যায় । তবে মনে রাখতে হবে যে, ক্যান্থারিসে কোন ফল না হলেই এই ঔষধে উপকার হয় ) ।
** অনেক সময়ে কতকগুলি ছোট ছোট ফোঁড়া হয়ে পুজ বেরোবার পর আবার কতকগুলি বেরোয় এবং সেই সঙ্গে অতিশয় বেদনা ও যন্ত্রণাও অনুভুত হয় । এরকম অবস্থায় আর্ণিকা যে শুধু যন্ত্রণা নিবারণ করে তা নয়, ফোঁড়াগুলির উপশমও হয় আর নতুন ফোঁড়াও হতে দেয় না । এছাড়া একটি ফোঁড়া আধা পাকা হয়ে তার মধ্যে থেকে পুঁজ না বেরিয়ে বসে গেলে, আর্ণিকা আভ্যন্তরিক ও বাহ্য প্রয়োগে সেই ফোঁড়া পাকিয়ে পুঁজ বের করে এককালে আরোগ্য করা যায় ।
** প্রসবান্তে ভ্যাদাল ব্যথায় আর্ণিকা বিশেষ উপকারী । বিশেষতঃ যেখানে প্রসব বেদনা অনেকক্ষণ পর্যন্ত থাকে ও প্রসব কষ্টকর হয়, সেখানে আর্ণিকা প্রয়োগে ব্যথা ও টাটানি শীঘ্রই কমে যায় । আবার কোন কোন ডাক্তার বলেন, এইরকম প্রসবের পর আর্ণিকা আভ্যন্তরিক ও বাহ্য প্রয়োগ করলে প্রসব জনিত ক্ষতস্থানে পুঁজ হতে পারে না ।
** আঘাত লেগে চোখে রক্ত জমলে আর্ণিকা, লিডাম ও হেমামেলিস বিশেষ উপকারী । কোন কোন ডাক্তার আঘাত জনিত চোখ-ওঠায় আর্ণিকার কার্যকারিতার বিশেষ প্রশংসা করে থাকেন । তবে ২-১ দিন আর্ণিকা ব্যবহারের পর উইফ্রেসিয়া প্রয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া গেছে ।