টাইফয়েডঃ
টাইফয়েড জ্বর স্যালমোনেলা টাইফি (Salmonella typhi) জীবাণু দিয়ে হয়ে থাকে। শারীরিক বর্জ্যের অপসারণের অব্যবস্থা (Lake of sanitation) টাইফয়েডের বড় কারণ। সাধারণত দূষিত খাবার (Pollute food) এবং পানির (Water) মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু ছড়ায়। মাছি এবং সংক্রমিত হাতের সাহায্যে এ রোগ ছড়াতে পারে। এই রোগের কারণে তীব্র জ্বর (Fever), মাথা ব্যথা (Headache), পেট ব্যথা (Abdominal pain), কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation) অথবা ডায়রিয়া
(Diarrhoea) হয়। টাইফয়েড বর্ষাতেই বেশি হয়।
কারণঃ
সালমোনেলা টাইফি (Salmonella typhi) নামক ব্যকটেরিয়া দ্ধারা সংক্রমণের মাধ্যমে টাইফয়েড হয়।
লক্ষণঃ
* প্রথম সপ্তাহে ( 1st week ) রোগীর মাথাব্যথা ও খারাপ লাগা এবং জ্বর শুরু হয়। দুই-তিন দিনে জ্বর ধাপে ধাপে ১০৩-১০৪ ডিগ্রী উঠে যার সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য ( Constipation ), বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পেটফাঁপা, পাতলা পায়খানা এবং ডানদিকে পেটের নিচে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। মৃদু কাশি, গলাব্যথা থাকতে পারে।
* দ্বিতীয় ( 2nd week ) সপ্তাহে জ্বর প্রায়ই সব সময়ই থাকে। পেট ফেঁপে ওঠে এবং এর সঙ্গে ব্যথাও পরিলক্ষিত হয়। এসময় পেটের উপরিভাগে এবং বুকের নিচের দিকে (Lower part of chest) গোলাপি ফুস্কুড়ি (Pink rash) দেখা যেতে পারে। এটি দুই-তিন দিন স্থায়ী হয়।
* তৃতীয় ( 3rd week) সপ্তাহকে জটিলতার (Complex) সপ্তাহ বলা চলে। কারণ এ সপ্তাহেই বেশির ভাগ জটিলতা দেখা দেয়। উচ্চমাত্রায় জ্বর হয়। পেট বেশি রকম ফুলে যায়(Swelling) এবং রোগীর পাতলা পায়খানা (Diarrhea) দেখা দেয়। অন্ত্রে রক্তপাত হতে পারে। শরীর ভীষণ রকম দুর্বল হয়ে পড়ে। ওজন কমে যায়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষারঃ
* রোগের ইতিহাস জানা (History of disease)
* রক্ত পরীক্ষা (Blood test) যথা- ভিডাল টেস্ট (Widal test), সিবিসি (CBC).
* প্রস্রাব-পায়খানা (Urine-Stool) ও অস্থিমজ্জা (Bone Marrow) পরীক্ষা
টাইফয়েড জ্বরে জটিলতাগুলো:
* অন্ত্রে ছিদ্র (Perforation of intestine) বা রক্তক্ষরণ (Bleeding)
* হৃৎপিন্ডের মাংসপেশীতে প্রদাহ
* অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ (Panereatitis)
* কিডনিতে সংক্রমণ(Kidney infection)
* মেরুদন্ডে সংক্রমণ (Vertibrae infection)
* শরীরের ঝিল্লিতে সংক্রমণ (Membrane infection) ও প্রদাহ এবং মাথায় ও মেরুদন্ডে তরল/রক্ত জমাট বাঁধা (Fluid storage)
* বিভিন্ন ধরণের মানসিক সমস্যা (Psychological disorder) যেমন- বিকারগ্রস্থ (Delirium), দৃষ্টিভ্রম (Hallucination), মস্তিষ্ক বিকৃতি (Paranoid) দেখা
দেয়।
প্রতিরোধঃ
* খাওয়ার আগে(Before food) ও পরে ভালো করে হাত পরিস্কার করতে হবে।
* বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
* প্রাণিজ ( Animal source ) খাদ্যগুলো ভালোভাবে রান্না করতে হবে।
* শাকসব্জিও (Vegetables) টাইফয়েড জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে এবং কাঁচা খেলে (Take green) তা থেকেও টাইফয়েড হতে পারে। তাই শাকসব্জি ভালো করে ধুয়ে রান্না করে খেতে হবে।
* হোটেলের খাবার (Hotels food) অথবা বাইরের খাবার অবশ্যই যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
* রাস্তা ঘাটে অপরিশুদ্ধ পানি, শরবত এগুলো খাওয়া যাবে না। পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ হতে হবে।
পথ্যঃ
* পর্যাপ্ত তরল খাবার (Liquid food) খেতে হবে
* স্বাস্থ্যকর (Healthy food) ও সুষম খাবার খেতে হবে
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাঃ
স্বতন্ত্র ঔষধ নির্বাচন এবং চিকিত্সার (Treatment) জন্য, রোগীকে অবশ্যই একজন ভালো, যোগ্যতাসম্পন্ন ও রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
চিকিত্সার সহায়ক ঔষধগুলো নিম্নরুপঃ
আর্সেনিক এল্ব, ব্যাপটিসিয়া, ব্রায়োনিয়া (Bryonia), আর্নিকা, চায়না (China), কার্বভেজ, ল্যাকেসিস, ক্যালিফস, জেলসেমিয়াম,আসিড ফস, এসিড মিউর, রাসটক্স এবং হাইয়োসিয়ামাস ইত্যাদি।