কুমড়ার বীজের ( Pumpkin seed ) বিশেষ উপকারিতা যা আমরা জানি নাপরিচিত ও সকলের পছন্দের সবজিগুলোর মধ্যে একটি কুমড়া। মিষ্টি স্বাদের এই সবজিটির যেমন জনপ্রিয়তা তেমন এর বীজেরও জুরি মেলা ভার। অসাধারন স্বাস্থ্য উপাদানের জন্য এটি সুপার ফুডগুলোর একটি। দেখতে চ্যাপ্টা ও কিছুটা হলদেটে রংয়ের বাইরের আবরন।•উপকারিতা💪কুমড়ার বীজে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু উপাদান পাওয়া যায়। যেমন – প্রোটিন,আয়রন,জিংক,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,ফসফরাস ও কপার। সুতরাং বলাই বাহুল্য এটি ছোট বীজটি শরীরকে রোগমুক্ত করতে কতটা উপকারী।। •হাড়ের গঠন সুরক্ষায়মানব দেহের হাড়ের গঠন সুরক্ষা দিতে প্রয়োজন ক্যালসিয়াম যা কেবল খাদ্য থেকেই গ্রহন করতে হয়। কারন এটি শরীরে উৎপাদিত হয় না। এক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরন করতে পারবে কুমড়া বীজ।এতে আরো আছে জিংক ও ম্যাগনেসিয়াম। তাই হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা বা অস্টিওপরোসিস নিরাময় করতে পারে কুমড়ার বীজ। •সুন্দর ঘুম নিশ্চিত করেকুমড়ার বীজ প্রাকৃতিক ঘুমের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এতে আছে ট্রিপটোফ্যান যা সেরোটোনিন নামক নিউরোকেমিক্যাল এ রূপান্তরিত হয়ে গভীর ঘুম নিশ্চিত করে। তাই যাদের অনিয়মিত ঘুমের সমস্যা রয়েছে তারা রোজ এই বীজ খেলে এই সমস্যা থেকে কাটিয়ে উঠতে পারে। •ডায়াবেটিসের জন্য উপকারীঅনেক ডায়াবেটিস রোগী রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। কুমড়ার বীজ সুগারের মাত্রাকে কমিয়ে আনে। তাই বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস এর জন্য এটি কার্যকর।এই বীজ প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। এই উপাদানটিই মূলত সুগারের লেভেল নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী। একটি গবেষণায়ও এই কথার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। সেজন্য সুগার নিয়ে চিন্তিত না হয়ে নিয়মিত পরিমানমত কুমড়ার বীজ খাওয়া শুরু করুন। •ওজন কমাতে সহায়তা করেছোট এই বীজটি আপনাকে অধিক খাদ্য গ্রহন করা থেকে দূরে রাখবে। মূলত কুমড়ার বীজ দীর্ঘক্ষণ পেটে থাকে ফলে ক্ষধার প্রবণতা কমে যায়। ফলে ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়াও সহজ হয়।•হার্টের সুরক্ষা দিতে কুমড়া বীজআমাদের দেশে হৃদরোগের হার সবচেয়ে বেশি। হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এর মত বিভিন্ন কার্ডিয়াক সমস্যায় ভুগছে লাখো মানুষ।এই বীজের ওমেগা-৩, ওমেগা-৬,এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার হার্টের জন্য অনেক উপকারী। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখতে সাহায্য করে।রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমানও কমিয়ে আনে। আবার রক্তচাপও কিছুটা কমিয়ে আনে। এসকল আচারনপর মাধ্যমে কুমড়ার বীজ হৃদযন্ত্রের ঝুঁকি কমিয়ে সুরক্ষিত রাখে। •গর্ভকালীন সময়ে কুমড়ার বীজএ বীজ গর্ভকালীন অবস্থায় মায়ের জন্য যেমন পুষ্টিকর তেমনি ভ্রূণের জন্যও কল্যানকর। কুমড়ার বীজের বেটা-ক্যারোটিন ভ্রূণের হার্ট, হাড়, চোখ, কিডনি, ফুসফুস, নার্ভ উন্নত করতে সাহায্য করে। কুমড়ার বীজ গর্ভাবস্থায় অনেক উপকারী খাদ্য হিসেবে পরিগনিত করা হয়। এর আয়রন ভ্রূণের দেহে অক্সিজেন সরবরাহ করে। জিংক এবং ওমেগা-৩ ব্রেন ডেভেলপমেন্ট ও নার্ভ সিস্টেমকে পরিপূর্ণ করে।তাই মাতৃত্বকালীন সময় জুড়ে কুমড়ার বীজ রোজকার নাস্তার অংশ হিসেবে যুক্ত করে নেয়া উচিৎ। •এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করেকুমড়ার বীজ শরীরের প্রদাহের পরিমান কমাতে পারে। এর ক্যারোটিনয়েড ও ভিটামিন ই ভালো এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি শরীরের ক্ষতিকারী কোষ গুলোকে জন্মাতে দেয় না। ফলে দেহ রোগমুক্ত থাকে। •ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়কহাজারো মানুষ মারা যাচ্ছে মরণঘাতী ক্যান্সার রোগে। এই রোগের কোন প্রতিষেধক না থাকায় এটি প্রতিরেধ করাই যুক্তিযুক্ত।একটি গবেষনায় জানা যায় কুমড়ার বীজে বিদ্যমান লিগন্যান স্তনের ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এটি মুত্রথলির ক্যান্সার রোধেও সহায়ক বলে জানা যায়। •পুরুষের স্পার্ম উন্নত করেকুমড়ার বীজ জিংক সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি পুরুষের অনুর্বরতার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। জিংকের স্বল্পতার কারনেই স্পার্মের কোয়ালিটি ক্ষুন্ন হয়। সাথে বেড়ে যায় অনুর্বরতার আশঙ্কাও। এই বীজ টেস্টোটেরনের মাত্রাও বাড়ায়। ফলে এটি স্পার্মের কোয়ালিটি বজায় রাখতে সহায়তা করে। •ত্বকের যত্নে কুমড়ার বীজকুমড়ার বীজের মূল্যবান উপাদানগুলো ত্বকের স্বাস্থ্যে বেশ কার্যকর। এর ভিটামিন এ ও সি ত্বকে কোলাজেনের পরিমান বাড়িয়ে তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের বলিরেখা দূর করে ফলে একে এন্টি এজিং হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।এর বিটা-ক্যারোটিন ও ওমেগা-৩ ত্বকের প্রদাহনাশক হিসেবে কাজ করে। তাই স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করে ব্রনের মত সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। •চুলের পুষ্টিতে কুমড়ার বীজএই অসাধারণ বীজটি আপনার চুলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য কে আরো বাড়িয়ে তুলতে এবং চুলের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। চুলের ড্রাইনেস দূর করে চুলকে কোমল ও প্রানবন্ত করে তোলে। চুলের গোড়াকে মজবুত করে চুল পরা কমায়। 😋কুমড়ার এই ক্ষুদ্র বীজে হাজারো স্বাস্থ্যোপকারীতা। খাদ্য তালিকায় একে সংযুক্ত করাও বেশ কঠিন নয়। তাই এই পুষ্টিকর খাদ্যটিকে নিয়মিত খেয়ে এর উপকারীতাগুলো উপভোগ করুন।